শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: মৌসুমের শুরুতে শীতের তেমন প্রকোপ না থাকলেও, মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসে হিমালয় থেকে আসা শৈত্যপ্রবাহে উত্তরাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে ।
আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা এই মৌসুমে তেঁতুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ জানিয়েছেন, একই সময়ে দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে। আকাশে মেঘ না থাকায় উত্তর থেকে ধেয়ে আসা শীতল বাতাসের গতি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে বলে জানান তিনি ।
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড় হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় সেদিক থেকেই আসছে এই হিমেল বাতাস। এ জন্য অন্যান্য জেলার চেয়ে অনেক আগেই শীত নামে পঞ্চগড়ে। এ ছাড়া অন্যান্য জেলার তুলনায় শীতের তীব্রতাও এখানে বেশি থাকে। শীতের স্থায়িত্বও থাকে বেশি দিন।
এদিকে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওসহ উত্তরের জেলাগুলোর জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা।
ঠাকুরগাঁওয়ের রিকশাচালক নজরুল গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এই সংবাদদাতাকে বলেন, ‘শীতের কারণে ২-৩ দিন ধরে রিকশা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে । বিরূপ আবহাওয়ায় লোকজন কম বের হওয়ার তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দৈনিক আয়ও কমে গেছে।’
সদর উপজেলার কৃষিশ্রমিক খাদেমুল ও দেবারু বলেন, তীব্র শীতে হাত-পা জমে যাওয়ার মতো অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে মাঠে থাকাটাও কষ্টকর।
শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার ফজিলাতুন নেছার ভাষ্য, ঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে ক্রমাগত ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করায় ২-৩টা কাঁথা-কম্বল দিয়েও শীত মানানো যাচ্ছে না।
এদিকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের চাপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। যাদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাকিবুল আলম চয়ন বলেন, হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে থাকা শয্যার তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্য ওয়ার্ডগুলোতেও দৈনিক শীতজনিত অসুস্থতা নিয়ে গড়ে আড়াই’শ রোগী অবস্থান করছেন। হাসপাতালের বহির্বিভাগেও রোগীর অতিরিক্ত চাপ দেখা যাচ্ছে।
পঞ্চগড় ও ঠাঁকুরগাঁও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এরমধ্যে ২ জেলার দুস্থ ও শীতার্ত মানুষের মাঝে ৫০ হাজারের বেশি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
আবহাওয়া কর্মকর্তা রাসেল শাহ্ জানান, এমন পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন থাকতে পারে।